রিজার্ভ বাড়ছে, ডলারের বাজারে ফিরেছে স্বস্তি


ডলার সংকট কাটিয়ে দেশের বাজারে স্বস্তির বাতাস বইছে। বর্তমানে কোনো ব্যাংকেই ডলারের ঘাটতি নেই। বাংলাদেশ ব্যাংক বাজারে ডলার সরবরাহের তুলনায় বেশি পরিমাণে ডলার কিনছে, যা বৈদেশিক বাণিজ্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ব্যবসায়ীদের এলসি করতে গিয়ে অতিরিক্ত ডলার কেনার চাপ কমেছে।

গত কয়েক মাস ধরে রেমিট্যান্সের প্রবাহ বৃদ্ধির কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২২ মে পর্যন্ত দেশের মোট বৈদেশিক রিজার্ভ ছিল ২৫.৬৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্দেশিত বিপিএম৬ হিসাব পদ্ধতি অনুসারে, এই সময় রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২০.২৭ বিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৯ মে পর্যন্ত গ্রস রিজার্ভ ছিল প্রায় ২৫.৪৪ বিলিয়ন ডলার। আইএমএফ নির্দেশিত বিপিএম৬ পদ্ধতি অনুসারে নিট রিজার্ভ নির্ধারণ করা হয়, যেখানে স্বল্পমেয়াদি দায় বাদ দিয়ে প্রকৃত রিজার্ভের পরিমাণ হিসাব করা হয়।

গত কয়েক মাস ধরে রেমিট্যান্সের অভূতপূর্ব প্রবাহের কারণে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দ্রুত বাড়ছে। চলতি মে মাসের প্রথম ১৭ দিনে প্রবাসীদের কাছ থেকে এসেছে ১৬১ কোটি ডলার রেমিট্যান্স। এর আগে মার্চ মাসে ৩২৮.৯৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স আসে, যা দেশের ইতিহাসে এক মাসে সর্বোচ্চ। এপ্রিলেও এসেছে ২৭৫ কোটি ডলার রেমিট্যান্স, যার স্থানীয় মুদ্রায় মূল্য প্রায় ৩৩,৫৭৪ কোটি টাকা।

২০২৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের ৭ মে পর্যন্ত প্রবাসীরা মোট ২৫.২৭৩ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছেন, যা দেশের ইতিহাসে এক অর্থবছরে সর্বোচ্চ। এর পাশাপাশি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১৯.৭২০ বিলিয়ন ডলার বেশি রেমিট্যান্স এসেছে।

রেমিট্যান্স বৃদ্ধির কারণে ডলারের বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে। ব্যাংকগুলোর মধ্যে ডলারের ক্রয়-বিক্রয়মূল্য এখন প্রায় ১২১ থেকে ১২২ টাকার মধ্যে রয়েছে, যদিও খোলা বাজারে ডলার বিক্রি হয় ১২৫ থেকে ১২৬ টাকায়। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলারের চাহিদা আগের তুলনায় অনেক কমে গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, আগামী জুন মাসে রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে। ৪০ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, যা অর্জনে সময় লাগবে। এজন্য ব্যাংকিং খাতকে শক্তিশালী করে সর্বোচ্চ সেবা দিতে হবে।

Post a Comment

Previous Post Next Post