যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি শিক্ষার্থীদের স্টুডেন্ট ভিসা স্থগিত, বাংলাদেশিরাও অন্তর্ভুক্ত

যুক্তরাষ্ট্র সাময়িকভাবে সব বিদেশি শিক্ষার্থীদের স্টুডেন্ট ভিসা দেওয়া স্থগিত করেছে, যার মধ্যে বাংলাদেশিরাও রয়েছে। তবে ধারণা করা হচ্ছে, এই স্থগিতাদেশ দীর্ঘস্থায়ী হবে না এবং আগামী কিছুদিনের মধ্যেই নতুন নির্দেশনা আসবে। যদিও বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসগুলোতে ভিসা আবেদন প্রক্রিয়ায় অনেক ধরণের জটিলতা ও বিলম্ব দেখা যাচ্ছে।

মঙ্গলবার (স্থানীয় সময়) মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এক অভ্যন্তরীণ নির্দেশনার মাধ্যমে এই ভিসা স্থগিতের নির্দেশ দেন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন এখন শিক্ষার্থীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম (সোশ্যাল মিডিয়া) আরও কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ বা যাচাই করার কাজ শুরু করেছে।

এই সিদ্ধান্তটি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক আরও একটি কঠোর পদক্ষেপ। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য একটি বড় রাজস্ব উৎস। এর আগে রুবিও শত শত স্টুডেন্ট ভিসা বাতিল করেন এবং ট্রাম্প প্রশাসন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়কে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি না করার নির্দেশ দিয়েছিল।

এই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সব মার্কিন দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলোকে "নতুন কোনো শিক্ষার্থী বা এক্সচেঞ্জ ভিসার সাক্ষাৎকারের সুযোগ না দিতে" বলা হয়েছে যতক্ষণ না নতুন নির্দেশনা দেওয়া হয়।

এতে আরও বলা হয়েছে, স্টেট ডিপার্টমেন্ট শিগগিরই শিক্ষার্থী ভিসার ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া যাচাইয়ের ব্যাপারে বিস্তারিত নির্দেশনা দেবে।

যদিও এই স্থগিতাদেশ স্বল্পমেয়াদি হতে পারে বলে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, দূতাবাসগুলোকে বলা হয়েছে যে তারা “আগামী কিছুদিনের মধ্যে” নতুন নির্দেশনা পাবে। তবুও, বর্তমানে ভিসা আবেদন প্রক্রিয়ায় অনেক ধরণের দেরি হচ্ছে।

স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস সরাসরি এই নির্দেশনা সম্পর্কে মন্তব্য না করলেও বলেন, “আমরা কারা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করছে, তা যাচাই-বাছাই করাকে খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখি।”

তিনি আরও বলেন, “প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মতে, আমাদের লক্ষ্য হলো এটা নিশ্চিত করা যে যারা এখানে আসছে, তারা আইন মানে, কোনো অপরাধমূলক উদ্দেশ্য নেই, এবং তারা এখানে ইতিবাচকভাবে অবদান রাখতে পারবে।”

শরৎ সেমিস্টার শুরুর আগে শিক্ষার্থীরা ভিসা পাবেন কিনা — এমন প্রশ্নের উত্তরে ব্রুস বলেন, “যদি কেউ ভিসার জন্য আবেদন করতে চায়, তাহলে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় আবেদন করুক এবং যাচাই-বাছাইয়ের জন্য প্রস্তুত থাকুক।”

গত সপ্তাহে রুবিও সিনেট শুনানিতে জানান, ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের পর (২০ জানুয়ারি) থেকে তিনি “হাজার হাজার” ভিসা বাতিল করেছেন।

তিনি একটি কম পরিচিত আইনের ব্যবহার করছেন, যা পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে এমন বিদেশিদের ভিসা বাতিলের ক্ষমতা দেয়, যাদের কার্যক্রম যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির স্বার্থের পরিপন্থী বলে মনে হয়।

এই সিদ্ধান্তের সবচেয়ে দৃশ্যমান লক্ষ্য হচ্ছে গাজা নিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা এসব শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ইহুদিবিরোধী মনোভাবের অভিযোগ তোলেন, যদিও অনেকে তা জোরালোভাবে অস্বীকার করেছেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post